স্বদেশ ডেস্ক:
অভিবাসী শ্রমিকদের ঘণ্টায় মাত্র দুই ডলার পারিশ্রমিক দিয়ে তৈরী করা বিলাসবহুল পণ্য ডিয়র ও আরমানির মতো আইকনিক ব্র্যান্ডগুলো হাজার হাজার ডলারে বিক্রি করছে। ইউরোপিয়ান আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।
আরনল্ট এবং তার পরিবারের ফরাসি মাল্টিন্যাশনাল বিলাসবহুল ফ্যাশন হাউস ডিয়র যে হাতব্যাগটি তৈরী করতে সরবরাহকারীকে প্রায় ৫৭ ডলার দিয়ে থাকেন, সেটি তারা বিভিন্ন স্টোরে প্রায় ২,৭৮০ ডলারে বিক্রি করেন বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জার্নালটিতে আরো বলা হয়, মিলানভিত্তিক ডিজাইনার যে হাতব্যাগটির জন্য সরবরাহকারীকে ২৭০ ডলার প্রদান করে, সেটি খুচরা বাজারে প্রায় ২,০০০ ডলারে বিক্রি করা হয়।
ইতালি পুলিশ অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ করা কারখানায় বেশ কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে এসব তথ্য পেয়েছে।
গত মাসে ইতালির আদালত ডিয়র, আরমানি এবং আরভিয়েরো মার্টিনি স্পার একটি সহযোগী সংস্থাকে আদালত প্রশাসনের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দেয়। এসব প্রতিষ্ঠান অভিবাসী শ্রমিকদের সাথে খারাপ আচরণ করছে বলে অভিযোগ পাওয়ার পর আদালত এই রায় দেয়।
তবে আরমানি কোনো ধরনের অন্যায় করার কথা অস্বীকার করেছে।
মিলানের আইনজীবীরা জানান, এসব কোম্পানি চীনা অভিবাসী এবং অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের নিয়োগ করার জন্য সাব-কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করে থাকে। অভিবাসী শ্রমিকদের ঘণ্টাপ্রতি মজুরি দেওয়া হয় দুই থেকে তিন ডলার। এসব শ্রমিক অবৈধভাবে ইতালি প্রবেশ করে।
এসব শ্রমিক প্রায়ই কারখানাতেই ঘুমায়, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে। এমনকি ছুটির দিনগুলোতেও তাদের কাজ করতে হয় বলে অভিযোগে প্রকাশ।
পুলিশ জানায়, প্রধানত কৃষিশ্রমিকদের এসব কাজে বেশি লাগানো হয়ে থাকে।
তাদের মতে, চীনা সাব-কন্ট্রাক্টরকে একটি হাতব্যাগের জন্য ১০০ ডলার (৯৩ ইউরো) দেওয়া হয়। ওই হাতব্যাগটি ফ্যাশন হাউস প্রায় ১৯৫০ (১৮০০ ইউরো) ডলারে বিক্রি করে।
আবার বৈধ সাবকন্ট্রাক্টর এক্ষেত্রে দালাল হিসেবে কাজ করে। তাদের সত্যিকারের কোনো উৎপাদন ক্ষমতা না থাকলেও তারা একই ব্যাগের জন্য ২৫০ ইউরো পায়। ফলে তারা প্রতিটি হাতব্যাগ থেকে মুনাফা করে ১৫৭ ইউরো।
পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, এই ব্যবস্থার ফলে চীনা কারখানায় অবৈধ শ্রমিকদের দিয়ে তৈরী পণ্যগুলো থেকে সর্বোচ্চ মুনাফা করা হয়।
সূত্র : নিউ ইয়র্ক পোস্ট